চট্টগ্রাম থেকে সিলেটে গত ৭ দিন ধরে ট্রেনের ওয়াগন আসছে না। এর ফলে সিলেট অঞ্চলে ডিজেল সংকট দেখা দিয়েছে। ২/১ দিনের মধ্যে ওয়াগন সিলেট এসে না পৌঁছালে এ সংকট তীব্র আকার ধারণ করতে পারে। বিষয়টি দ্রুত সুরাহা না হলে বোরো আবাদও বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। তবে, জ্বালানী তেল বিপনন ও সরবরাহকারী রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান পদ্মা, মেঘনা এবং যমুনা অয়েল কোম্পানীর পক্ষ থেকে উদ্ভূত সংকট নিরসনের প্রচেষ্টা চলছে বলে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলারস ডিস্ট্রিবিউটরস এজেন্ট এন্ড পেট্রোলিয়াম ওনার্স এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব জুবায়ের আহমদ চৌধুরী জানান, সিলেটে ডিজেল সরবরাহ ওয়াগন নির্ভর হওয়ায় তাদেরকে প্রায়ই এমন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়। এ সংকট নিরসনে চাহিদা মাফিক একাধিক ডিজেলবাহী ওয়াগন সরবরাহ এবং বিকল্প পদ্ধতি অবলম্বনের দাবী উঠলেও তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। অন্যথায় আগামীতে এ সংকট আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলেও আশংকা এ জ্বালানী তেল ব্যবসায়ীর। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলারস ডিস্টিবিউটর এজেন্ট এবং পেট্রল পাম্প ওনার্স এসোসিয়েশনের সহ সভাপতি হুমায়ুন আহমদ জানান, ডিজেল সংকটের কারনে জালানী পরিবহণ ব্যবসায় স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এতে করে সিলেটে ডিজেল সংকটের কারনে জনসাধারণের দূর্ভোগ পোহাতে হবে। রেলওয়ে কতৃপক্ষ চাইলে বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা সম্ভব হতো। রেলওয়ে ও জ্বালানী তেলের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, চট্রগ্রাম থেকে সপ্তাহে দু’তিনটি করে তেলবাহী ওয়াগন সিলেটে এলেও সম্প্রতি তা একটিতে এসে দাঁড়িয়েছে। এতে করে সিলেট অঞ্চলে ডিজেলের চাহিদার অপর্যাপ্ততা থেকে যাচ্ছে। গত ৯ নভেম্বর তেলবাহী ওয়াগন সিলেট এলেও ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এবং ব্রাক্ষণবাড়িয়ার কসবায় ট্রেন দুর্ঘটনার অজুহাতে আর কোন ওয়াগন সিলেটে এসে পৌঁছেনি। পদ্মা এবং যমুনার দু’জন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আখাউড়া স্টেশনে তেলবাহী ওয়াগানটি শুক্রবার থেকে পড়ে আছে। কসবায় ট্রেন দুর্ঘটনার পর তেলবাহী ওয়াগনের ইঞ্জিন যাত্রীবাহী রেলে যুক্ত হওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলেও জানান তারা। যমুনার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তিনি গতকাল শনিবার রাতেও বিষয়টি নিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছেন। আজ কালের মধ্যেই ডিজেল নিয়ে ওয়াগন সিলেট এসে পৌঁছবে বলেও তাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে। জানা যায়, প্রতিটি ওয়াগানে ২৪টি রেক থাকে। পরবর্তীতে তেল বিপণণকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা, মেঘনা এবং যমুনা কোম্পানীর মধ্যে এসব রেক বন্টন হয়ে থাকে। ওয়াগানের মধ্যে ধারণ ক্ষমতার তারতম্য রয়েছে। ওয়াগানের ডিজেল দিয়ে পুরো সিলেট জেলা এবং সুনামগঞ্জের আংশিক এলাকায় সরবরাহ করা হয়। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে যমুনার ডিস্ট্রিক মার্কেটিং ম্যানেজার মো: আব্দুল বাকী জানান, রেলওয়ে ওয়াগন পরিবহন সংকটের কারণে সিলেটে ডিজেল সংকট দেখা দিয়েছে। সিলেটে ডিজেল সরবরাহ ওয়াগন নির্ভর না রেখে আরো বহুমাত্রিক করতে তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। এ বিষয়ে পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতি সিলেটের সভাপতি মোস্তফা কামাল বলেন, আমরা আগেই এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি। প্রতি বছর এ সময় আসার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জ্বালানি তেলের সংকটের কবলে পড়তে হয়। ট্রেনের ওয়াগন আসার বিষয়ে সিলেট রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার আতাউর আলাপকালে জানান, চট্রগ্রাম থেকে তেলবাহী ওয়াগন এলেই তা দ্রুত সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে।